মঙ্গলবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১০

ফেলে আসা স্মৃতি-০৩

☼পড়া চোরা☼

বাবা শিক্ষক হওয়ায় ছোটবেলা থেকেই কড়া নজর আর শাসনে ছিলাম। অন্যদের মত আড্ডাবাজি করতে পারি নাই। খেলাধুলা করলেও নির্দিষ্ট সীমানার মাঝে ছিল তা। নিয়মিত পড়া দেওয়া থাকত, আর সময়মত চলত সেই পড়া আদায়। প্রাইমারী বৃত্তি পরীক্ষায় সময়, তখন অতটা স্কুলে যেতাম না, ভালো করে পড়াশুনার জন্য। আব্বা স্কুলে যাবার সময় পড়া দিয়ে যেতেন, আর সন্ধ্যায় পড়া আদায় করে নিতেন। এভাবেই চলছিল, কিন্তু মাঝে মাঝে কেমন জানি বিস্বাদ লাগছিলো, একঘিয়েমি পেয়ে বসল। কিন্তু কোন উপায়ও নাই!!!! জ্বর এসেছে বলেও পার পাবার উপায় নেই, হয়ত কপাল ঘসে কিছুটা দেখানো যাবে, কিন্তু পুরা বডিইতো ঠান্ডা। থার্মোমিটার কেউ বোকা বানানো যাবে না। কোন উপায় পাই না………….

Share/Bookmark

ফেলে আসা স্মৃতি-২

☼দই☼

ছোটবেলা থেকেই দইয়ের ভক্ত ছিলাম, বাড়ি বগুড়া বলেই কিনা জানি না। যা হোক আজ দই নিয়ে স্মৃতি রোমহ্নন করছি। পিচ্চিকালে তখন দই বিক্রেতা ভারে করে (বাশের লিঠির মত যা ঘাড়ে নিয়ে এর দুই মাথায় রশি দিয়ে বাশের ঝুড়িতে কিছু বহন করতে ব্যবহার হয়) দই বিক্রি করতে আসত। দই বিক্রতের ডাক শুনলেই হল, কিভাবে যে আমার কানে আসত, সাথে সাথে দৌড় দিতাম, দই আনার জন্য। এভাবে মোটামুটি রেগুলার কাস্টমার আমি, দই ওয়ালারাও সম্ভবত বাড়ির সামনে এসে জোরে হাঁক দিত। মাঝে মাঝে এমন অবস্থা যে কখনও দই ওয়ালা এসে হাঁক দিলে আর আমার কোন নড়াচড়া পাওয়া না গেলে আম্মাই চিন্তায় পড়ে যেত, আমি কই গেলাম, বাড়িতে নিশ্চয় নাই , কারন বাড়িতে থাকলে, আর দই ওয়ালা আসলে আমি চুপ থাকব, এটা অসম্ভব। তাই ছোটবেলায় দইওয়ালা আসলেই বোঝা যেত আমি কোথায়!!!!!

Share/Bookmark

রবিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১০

প্রবাসের রান্নাঘরঃ খাসির বিরিয়ানী

আজকে রান্না করলাম খাসির বিরিয়ানী। অবশ্যই নিজের রেসিপি, কিন্তু পেয়াজ একটু বেশি আচে যাওয়ায় আর মনে হয় গরম মসলা কিঞ্চিৎ বেশি হওয়ায় লালচে হয়েছে, এর পরের টার্গেট হবে সাদা রঙ রাখার।



যেভাবে শুরু করবেন। যা যা লাগবেঃ

পোলাও এর চাল, খাসির মাংস, কাঁচা মরিচ, পেয়াজ, তেল, গরম মসলা, আদা-রসুন পেষ্ট।


প্রথমে পরিমান মত খাসির মাংস কেটে নিন। এবার পেয়াজ কুচি করে নিন, সস্প্যানে তেল দিয়ে চুলায় দিন, তেল হাল্কা গরম হলে এবার পেয়াজ কুচি ছেড়ে দিন, কাঁচা মরিচ গরম মসলা, লবন, আদা-রসুন পেষ্ট দিয়ে নাড়ুন। (নিচের ছবি দ্রঃ)

এবার পোলাও এর চাল
পানিয়ে ধুয়ে পানি ঝরাতে দিন।

Share/Bookmark

শনিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১০

ফেলে আসা স্মৃতি-১

মানব জীবন বড়ই বৈচিত্রময়। কখন মনে যে কি উদয় হয় আর কি যে অস্ত যায়, বুঝা মুসকিল। প্রবাসে এসে ইদানিং মাঝে মাঝে শৈশবের স্মৃতিগুলো বেশ জোরালোভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। মাঝে মাঝেই হারিয়ে যাচ্ছি সেই সোনালী ছেলেবেলায়। আর মনে হয় ঐ সময়টাকেই কোনভাবে যদি আটকে রাখা যেত? থাকতো না করুন বাস্তবতা, হা-পিত্যেশ, দৌড়াদৌড়ি--------খাবার সময় মা খাওয়াইয়া দিত, ঘুম পাড়িয়ে দিত---- আর এখন বাস্তবতার যাতাকলে পিষ্ট। চলছে রোবোটিক লাইফ। এই সিরিজে সেই পিচ্চিবেলার ঘটনাগুলো আপনাদের সাথে ধারাবাহিকভাবে লিখব ভাবছি----





শশা!!!☼


আমাদের বাড়ি গ্রামে হলেও বিশ্বরোডের একবারে সাথেই, সাথে রয়েছে শহুরে সুযোগ সুবিধা। ফলে গ্রাম-শহর দুটারই ছোঁয়া পেয়েছি। আমার আম্মা চাকুরিজীবি হলেও তার সাংসারিক কাজকর্মের একনিষ্ঠতা দেখলে আসলে গর্ব করার মত

Share/Bookmark

বৃহস্পতিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১০

অভাগা যেদিকে যায়......খাল-বিল-নদী-নালা-মহাসাগর শুকিয়ে যায়।




আজকের দিন কি দেখে যে শুরু করেছি মনে করতে পারছি না। সবকিছুতেই ভেজাল অবস্থা। যেভাবেই যাই, কিছুই এগোয় না। ল্যাবের জন্য একটা পোষ্টার প্রিন্ট করবো। এটা নিয়েই আজ ইতিহাস। প্রফেসর ইমেইল জানালো আফটারনুনে ক্যাড রুমে যেতে ওখানকার বড় প্রিন্টারে প্রিন্ট করতে হবে, যেহেতু জাপানীজ পিসি সুতরাং প্রফেসরই সাহায্য করবে। আমি ইমেইল দিলাম, আফটারনুন বললেই নির্দিষ্ট সময়টা কখন। জানলাম ১২টায় যেতে হবে, জো হুকুম জাঁহাপনা, গেলাম ১২টায়...............সেই থেকে ইতিহাস!!!!!!


ডাটা কেবলে সমস্যা, যেটা পিসি অনেক চেষ্টার পর জানা গেল। এবার প্রফেসর একটা ল্যাপ্টপ দিয়ে আমাকে বলে গেলেন, মাষ্টার্সের এক স্টুডেন্ট এসে আমাকে প্রিন্ট করতে সাহায্য করবে। কপাল খারাপ হলে আর কি বলবো, ল্যাপি কেবল চালু করে প্রিন্টার চেক করতেছি, পাওয়ার গেল। কিন্তু এভাবে তো পাওয়ার যাওয়ার কথা না। সবাই দেখি ল্যাব থেকে বাহিরে এসেছে, কারন ইলেক্ট্রিসিটি এভাবে চলে যাওয়ায় কেঊই বিশ্বাস করতে পারছে না, কারন এটা সিডিউল মেইন্টিনেন্সও না, কোন আগাম ঘোষনাও ছিল না, আর জাপানে লোডশেডিং? এমন ইতিহাস নেই। কিন্তু সেটাও আজ হয়ে গেল। কি আর করা, অপেক্ষায় থাকলাম। ২০মিনিট পরে আসলো পাওয়ার। আবার ল্যাপি নিয়ে ঝাপিড়ে পড়লাম। কিন্তু ্কপালের ফের, ল্যাপিতে ঐ প্রিন্টারের ড্রাইভার পাচ্ছে না। আবার আমি অফিস ২০০৭ এ কাজ করেছি কিন্তু ২০০৭ আর ২০০৩ দুই ভার্সেনেই সেভ করেছি, কিন্তু ঐ ল্যাপির অফিস ২০০৩ তে আমার কাজটার লেখা উদ্ভট দেখায়। ল্যাবে গেলাম ২০০৩ ভার্সনের জন্য ২০০৭ এর এড অন ডাঊনলোড করতে, আবারো কপাল মিয়া বিপক্ষে গেল। হঠাৎ পাওয়ার যাওয়ার এখনও নেট আসে নাই, পাওয়ার আসলেও।



দৌড়ে বাসায় গেলাম, এডঅন সহ পোর্টেবল অফিস ২০০৭ নামালাম। এরপর বাড়তি সতর্কতা হিসাবে ঐ প্রিন্টারের ড্রাইভার ডাঊনলোড করলাম, আমার ল্যাপিও নিলাম। শুরু হলো প্রিন্ট করার যুদ্ধ। পোর্টেবল অফিস ২০০৭ ব্যবহার করেও কাজ হচ্ছে না, সব ডিজাইন ওলট পালট। না হয় ওলটপালট হোক, ভাবলাম দেখি প্রিন্ট কেমন আসে, কিন্তু প্রিন্টার ইরোর দেখায়। মাষ্টার্সের ঐ ছেলে যখন হাল ছেড়ে দিলো, আমার ল্যাপি দিয়ে ট্রাই করা শুরু করলাম, দেখি আমি যে ড্রাইভার নামিয়েছি, সেটা সাপোর্ট করছে না। পরে প্রফেসর ল্যাব থেকে আসলো, এই অবস্থা দেখে সে নিজের অফিস রুম থেকে একটা আর একটা ড্রাইভার সফটওয়ার এনে দিলো, সেট আপ দিলাম আবার আমার ল্যাপিতে। কিন্তু প্রিন্টার এর মাথা বিগড়ে গেছে, প্রতিবার প্রিন্টার ইনিশিয়ালাইজ করতে গিয়ে ব্যাটা বারবার কাগজ কেটে ফেলছে, তাও যদি কাজ হত খুশি হতাম।


প্রিন্টার আবার এলার্ট দিচ্ছে কালি কমে গেছে, প্রফেসর সব কার্টিজ বদলে দিলো, শেষমেষ প্রিন্ট দিতে গেলাম, কিন্তু ইনপুট আর আউটপুট সাইজে ভুল করায়, প্রিন্ট হলো এ৪ এ, কি আর করা আবারো দিলাম প্রিন্ট কিন্তু এবার চ্রম ভেল্কি, ইনলার্জ এত হয়েছে যে কাগজের প্রস্থের দ্বিগুন পরিমান সাইজ এ প্রিন্ট করা শুরু করেছে, যা ফলাফল হাফ প্রিন্ট। মেজাজ চরম বিলা। কার এত মনযোগ থাকে? সেই ১২টা থেকে এই যন্ত্রনা চলছে, মাঝে নাকে মুখে একবার খাবার গিলে এসেছি। এবার সবকিছু ওকে করে প্রিন্ট দিলাম। কিন্তু ঐযে কথায় আছে না, অভাগা যে দিকে যায়......

প্রিন্টার এবার সাইজমতই প্রিন্ট করা শুরু করেছে, কিন্তু ১ম ৪০% বাদ দিয়ে এরপর থেকে প্রিন্ট করছে। কি আর করা প্রফেসরেরও বাসায় যাওয়া লেট হয়ে যাচ্ছে, সে বললো আচ্ছা, এবার তাহলে পেজ ১৮০ডিগ্রী করে প্রিন্ট করা হোক, তাহলে এবার প্রথমের অংশ প্রিন্ট হবে, পরে জোড়া দিলেই হবে। আমিও সায় দিলাম, কারন পেটের জ্বলুনি শুরু হয়েছে, মাগরিব-এশাও পড়ি নাই। কিন্তু শেষে এসে প্রিন্টার পুরাই চমক দেখিয়ে দিলো, উলটা দিক থেকে প্রিন্ট করতে দেওয়ার এবার সে ১০০% নির্ভুলভাবে প্রিন্ট দিলো, সেই সাথে আমার মোটামুটি ৭ঘন্টার যুদ্ধেরও পরিসমাপ্তি ঘটলো।
Share/Bookmark
^ Back to Top