শনিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১১

জাপানের ডায়েরীঃ টোকিও বৈশাখী মেলা ২০১১

এনিয়ে পরপর তিনবার টোকিওর ইকেবুকরোর নিশিগুচি পার্কে অনুষ্ঠিত বৈশাখী মেলায় গেলাম। এবারই প্রথম সাদামাটাভাবে মেলা পালিত হলো। জাপানের সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া বিপর্যয়ের পর, পুরা জাপানেই এর প্রভাব পড়েছে জাতীয় জীবনের পাশাপাশি ব্যক্তিজীবনে। আর এটা একটা চ্যারিটি প্রোগামও হিসাবে পরিচালিত হয়েছে এবার। প্রায় দশলাখ ইয়েন সহায়তা এসেছে মেলায় আগমনকারীদের কাছ থেকে। বাংলাদেশীরা বাদে এই মেলার উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহনকারী থাকত জাপানীজরা, কিন্তু বিপর্যয়ের পর থেকে জাপানীজরাও অনেক গুটিয়ে নিয়েছে নিজেদেক। আগে ওরা যেকোন আমুদে অনুষ্ঠানে বিশেষ করে জাপানে অবস্থানরত বিদেশীদের অনুষ্ঠানে অকাতরে অংশ নিত, কিন্তু এবার সবকিছুতেই ভাটা পড়েছে। গতবারের মেলার চেয়ে এবার বাংলাদেশীদের অংশগ্রহনও প্রায় অর্ধেক, এর কারনও সাম্প্রতিক বিপর্যয়, অনেকে আবার এই বিপর্যয়ের পর একমাসের ছুটিতে দেশে রয়েছেন, অনেকের পরিবার পাঠিয়ে দিয়েছেন। ফলে অনেকেরই আসা হয়নি। খাবারের ষ্টলও এবার তুলনামূলক কম। অন্যান্য ষ্টলও কম। খাবারের মানও এবার ভালো লাগলো না। যা তৈরি করেছে, তা গুনগতমানহীন। রসমালাই খেলাম, মনে হলো মিষ্টি দেয়া দুধে আটার গোলা  (গোল্লা নয়) খেলাম। স্বভাজাত বেশি ইনকামের চিন্তা, কিন্তু তারা যে বাংলাদেশকে উপস্থাপন করছে এই চিন্তা নেই। তবে একটা বিষয় ভালো হয়েছে, তা হচ্ছে মোটামুটি লোকজনের কম আগমনে বেশ আরামে ঘোরাফেরা করা গেছে, স্টেজের সামনের বসার অংশ প্রায় ফাঁকা ছিলো, কারন একদিকে যেমন রোদ আর লোকের সরগরম কম হওয়ায় সবাই ইচ্ছেমত বসতে বা দাঁড়িয়ে অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পেরেছে, যদিও বাংলাদেশ থেকে এবার কোন শিল্পী আসেনি। যদিও এই মেলার উদ্যোক্তাদের ওয়েবসাইটে লেখা ছিলো ক্লোজআপ তারকা লিজা আসার কথা। যাহোক এবারের মেলায় স্থানীয় উত্তরণ এবং স্বরলীপি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে। বাংলাদেশী গানের তালে জাপানীজদের নাচ বেশ দর্শনীয় ছিলো [নিচের ভিডিও দেখুন]।


Share/Bookmark

শনিবার, ৯ এপ্রিল, ২০১১

জাপানের ডায়েরীঃ জাপানে বসন্ত-সাকুরা-হানামী উৎসব

চেরি ফুলকে জাপানে সাকুরা বলা হয়। Japanese kanji : 桜 or 櫻; hiragana: さくら। তবে এই ফুল দেয়া চেরি গাছ থেকে চেরি ফল পাওয়া যায় না, চেরির আর এক প্রজাতির গাছ থেকে চেরি ফল পাওয়া যায় যা জাপানিজে sakuranbo বলে। জাপানে এই সাকুরা ফুল ফোটার সময়ে উৎসব এর বন্যা বয়ে যায়। সবাই সাকুরা ফুলে ছবি তোলা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। সাকুরা ফুল দেখা নিয়ে যে উৎসব হয় তাকে হানামি (hanami: 花見) বলে। জাপানে প্রায় ২০০ প্রজাতির চেরির চাষ হয়। এই ফুল ফোটার সময় হলো এপ্রিল মাস। এসময় সারা জাপান হালকা গোলাপী রঙে রঙিন হয়ে ওঠে। হানামি উৎসবে কবি-গায়ক-সকল স্তরের মানুষ স্থানীয় কোন পার্ক/স্থান যেখানে চেরির গাছ থাকে সেখানে জড়ো হয়ে উৎসবে মেতে ওঠে। জাপানের ১০০ ইয়েনের মূদ্রায় এক পিঠে এই সাকুরার ফুল অংকিত আছে।
 
 এপ্রিলে এই হানামী উৎসব জাপানীজদের মনে বেশ রাঙিয়ে তোলে। যদিও গত ১১ই মার্চের ৯ মাত্রার ভূমিকম্প এবং সুনামীর প্রভাব এখনও এদের মনে দগদগে ঘা এর মত হয়ে আছে, এখন এটাই দেখার বিষয় সাকুরা এদের দেহ ও মনকে কতটা প্রফুল্ল করে তোলে। নিচে গতবারের হানামীর সময় তোলা সাকুরার ছবি এবং ভিডিও।








Share/Bookmark
^ Back to Top