মঙ্গলবার, ১৬ আগস্ট, ২০১১

ঢাকাকে বিকেন্দ্রীকরণ এবং অনুষাঙ্গিক ভাবনাঃ একটি ব্যক্তিগত চিন্তার অপপ্রয়াশ

প্রতিবছর দেশের নানা বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজ থেকে পাস করে হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী ঢাকামুখী হচ্ছে জীবিকার জন্য। এছাড়া বিভিন্ন দুর্গত এলাকার মানুষ আশ্রয়ে খোঁজে ঢাকায় আসছে। এভাবে সারাদেশ থেকে ঢাকামুখী এই মানুষের ঢল ঢাকাকে করছে মানুষের বসবাসের অযোগ্য। ঢাকায় মানুষ বাড়ছে কিন্তু সেই হারে কি ঢাকা শহরের আয়তন বাড়ছে? রাস্তাঘাট সেই মান্ধাতা আমলে করা প্রসস্থতা নিয়েই আছে, কিন্তু এই বর্ধিত জনসংখ্যার চাপে যানজট ভয়াবহ আকার নিচ্ছে, ফলে প্রতিনিয়ত বাড়ছে দুর্ঘটনা এবং অনাকাঙ্খিত মৃত্যু। এখন যে অবস্থা চলছে বাসা থেকে বের হয়ে রাতে আবার বাসায় ফিরে যাবে কিনা সন্দেহ আছে। উর্ধ্বমুখী এই মানুষের ভীড়ে ঢাকা যেমন মানুষের মেলা, বেড়েছে যানজট, তেমনি জীবিকার অভাব, মানুষ অবৈধ পেশায় জড়িয়ে পড়ছে। আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা ধ্বসে পড়ছে। ছিনতাই-রাহাজানি অহরহরেই ঘটছে এই মেট্রোপলিটন শহর ঢাকাতে। সামান্য কারনেই খুন হচ্ছে মানুষ। এসবের মুলে আসলে ঢাকা মাত্রারিক্ত জনসংখ্যার চাপ, এই অতিরিক্ত জনসংখ্যার কারনে ঢাকা শহরে মানুষ পারছে না স্বাভাবিক জীবন অতিবাহিত করতে। তাই ঢাকাকে বিকেন্দ্রীকরণ আজ জরুরী। সারাদেশ থেকে  মানুষের এই ঢাকামুখী স্রোত বন্ধ করতে হবে, তবে সেটা আইন করে জোর করে নয়, অন্যান্য জেলা শহরেও সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে। ঢাকায় নতুন করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান-কলকারখানা স্থাপন বন্ধ করতে হবে, বরং অন্যান্য জেলায় এগুলো স্থাপনে উৎসাহ দেবার জন্য সরকার কর্তৃক বিশেষ সুবিধা ঘোষনা করা যেতে পারে। এজন্য দরকার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা , আস্তে আস্তে ভেবে চিনতে এগুতে হবে, যাতে ভুলের কারনে গচ্চা না হয়। যদিও আমাদের দেশে প্রজেক্ট খুবই জনপ্রিয়, প্রতি বছর নতুন নতুন প্রজেক্ট আবার প্রজেক্টের সম্ভাবতা যাচাই এর জন্য কোটি কোটি টাকা লস, সংশ্লিষ্ট বড় কর্তাদের অভিজ্ঞতা অর্জনে বিদেশে ভ্রমন ব্লা ব্লা ব্লা......এভাবেই টাকা শেষ, প্রজেক্ট তখন ফাইলবন্দী।

যাহোক আসল কথায় আসি, সারাদেশের সকল জেলা সদরের সাথে ঢাকা সড়ক যোগাযোগ উন্নত করতে হবে, রাস্তা ডবল লেনের করতে হবে। এক্ষেত্রে কিছু সুপার হাইওয়ে করা যেতে পারে, যেগুলোতে আরো দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছা যাবে কিন্তু বিনিময় টোল দিতে হবে। সরকার এজন্য বাহিরের কনষ্ট্রাকশন কোম্পানীর সাথে যোগাযোগ করতে পারে, যারা নিজেদের অর্থায়নে এই সুপার মহাসড়ক তৈরি করে নিজেরা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত টোল আদায় করে খরচ ঊঠিয়ে নেবে, এরপর এটা সরকারের হয়ে যাবে।

ঢাকা ও এর আশেপাশের জেলাগুলির সাথে ট্রেন যোগাযোগ উন্নত করতে হবে, সর্বোচ্চ আধাঘন্টা ব্যবধানে এসব জেলা সদরের সাথে ঢাকায় ট্রেন চলাচল করাতে হবে। ট্রেনগুলিতে ৫-১০টা বগি থাকবে, ফলে ঢাকায় থাকার মানসিকতা কমে যাবে, মানুষ প্রতিদিন আশেপাশের জেলা থেকে ঢাকায় তাদের অফিস করতে পারবে। যার ফলে ঢাকায় মানুষের চাপ অনেক কমে যাবে।


Share/Bookmark
^ Back to Top