বুধবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১০

জাপানের ডায়েরীঃ স্কুলের বাচ্চাদের সাথে একদিন

মাঝে মাঝেই স্থানীয় স্কুলগুলি থেকে আশে পাশে থাকা বিদেশী ছাত্রদের ডাক পড়ে বাচ্চাদের সাথে নিজ নিজ দেশকে পরিচিত করে দিতে। ব্যস্ততা থাকলেও দেশকে জাপানের বাচ্চাদের সাথে পরিচিত করে দিতে পারবো, এই ভাবনা থেকেই রাজি হয়ে গেলাম। এই প্রোগ্রামটা দু'দিনে ভাগ করা ছিলো। ১মটা ছিলো অক্টোবরে, তারিখ মনে নেই। আমরা ছিলাম ৫জনঃ দুই তাইওয়ানীজ মেয়ে, মরক্কোর একজন, ভারতের একজন আর আমি। সবাই প্রায় স্লাইড বানিয়ে নিয়ে এসেছে প্রেজেন্টেশনের জন্য। আমিও স্লাইদ বানিয়েছিলাম, ছিলো আমাদের সংস্কৃতি, ধর্মীর আচারাদি, পোষাক, খাবার, জাতীয় পশু, খেলা, ফুল, ফল ইত্যাদি। বাচ্চা দের দেখলাম বেশ মনে ধরেছে, কারন ওদের আর আমাদের পতাকা প্রায় একই, শুধু সাদা আর সবুজে পার্থক্য। সাথে শিখালাম আমাদের সম্ভাষন, সালাম, হ্যাঁ, না, আমি ভালো আছি প্রভূতি টুকটাক কথামালা। বেশ মজা পেয়েছিলো বাচ্চাগুলো। আমি অবশ্য প্রিন্ট আঊট করে নিয়েগিয়েছিলাম প্রেজেন্টেশনের চাইতে আরো বেশিকিছু যা বাচ্চাদেক বিলি করে দিয়েছি। অন্যরাও নিজেদের দেশকে উপস্থাপন করেছে। আমি অবশ্য ৩টা ক্লাসের শেষেরটাতে অংশ না নিয়েই ল্যাবে চলে এসেছি, কারন আমার একটা প্রেজেন্টেশন ছিলো ল্যাব সেমিনার এ।
বাচ্চাদের একাংশ

 আমাদের একাংশ-ইন্ডিয়ান, মরক্কোর দম্পতি...

দুইজন তাইওয়ানীজ মেয়ে



বাচ্চাদের আঁকা বাংলাদেশের পতাকা



 বাংলাদেশ নিয়ে বাচ্চাদের উপস্থাপনা


বাচ্চাদের একাংশ




 বাচ্চাদের সাথে লাঞ্চ-ভাত, সবজি, স্যুপ, কোয়েল পাখির ডিম, আর দুধ
বাংলাদেশ

২য় পর্বে মানে আজকে ৮ই ডিসেম্বর ছিলো বাচ্চাদের পালা। আমরা যা দেখিয়েছি আমাদের নিজ নিজ দেশকে নিয়ে, ওরা নিজেরা আবার সেটা আমাদেক উপস্থাপনা করবে। না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না, বাচ্চাগুলো কি চমৎকার আর নিষ্টার সাথে বাংলা বলছে- যেমন আস সালামও ওলাইকুম, আমি ভালো আছি, ধন্যবাদ। সাথে এরা নিজেরাই একেছে বাংলাদেশের পতাকা, ফুল, পশুর ছবি, খাবারের ছবি। পুরই অভিভূত, ভালো লাগছিল প্রিয় মাতৃভূমিকে নিজে অন্য একটা দেশের বাচ্চাদের চমৎকার উপস্থাপনা। অনুষ্টানের মাঝে ছিলো বাচ্চাদের সাথে চমৎকার লাঞ্চ এবং ওদের টুকটাক প্রশ্নের জবাব দেয়া। খুবই মিশুক বাচ্চারা। আসার সময় ধন্যবাদ, খোদা হাফেয কথাগুলি যখন কচি মুখগুলি দিয়ে শুনতেছিলাম, চোখ ভিজে উঠেছিলো প্রিয় বাংলাদেশের কথা মনে করে। কতদিন মন খুলে বাংলা বলি না, বুকে মনে হয় পাথর চেপে আছে। শেষে আড়াইটার সময় বিদায় নিলাম, স্কুলটা আমার ক্যাম্পাসের পাশেই হেঁটে ২০মিনিটের পথ, কয়েক বাচ্চাদের বাসা আমার হাঁটা পথেই ছিলো, পাশাপাশি হেটে আসলাম, যেখানে আমাদের পথ আলাদা আবারো বললো খোদা হাফেয, ধন্যবাদ......চলে আসলাম ক্যাম্পাসে কিন্তু মনে গেথে রাখলাম কিছু সুখ স্মৃতি, আমার বাংলাদেশকে পরিচিত করে দেবার আনন্দ............
Share/Bookmark

২টি মন্তব্য:

Rezowan বলেছেন...

ভালো লাগলো কিন্তু অত্যাধিক উইডজেডের কারণে লোড নিতে সময় লাগছে।

♛মুকুট♛ বলেছেন...

ধন্যবাদ আপনাকে। দেশের বাহিরে থাকার জন্য লোডিং এ বেশি সময় নেওয়াটা খেয়াল করি নাই, তবে আপনার মন্তব্যটা মাথায় থাকলো, কিছু কমিয়ে ফেলবো। শুভেচ্ছা

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

^ Back to Top