সোমবার, ৪ জুলাই, ২০১১

আম্রিকা ট্যুরঃ পর্ব-০১

গত বছর একটা কনফারেন্সে আমেরিকা গিয়েছিলাম, সেটা নিয়ে একটা সিরিজ লেখার চিন্তা মাথায় থাকলেও সময় আর সুযোগ ব্যাটে-বলে না হওয়ার এতদিন পর ভাবলাম লেখা শুরু করি। কনফারেন্স ছিলো গতবছরের নভেম্বরে। কনফারেন্স কমিটির গ্রীন সিগন্যাল পাওয়ার পর ভিসার জন্য টোকিওর আমেরিকান এম্বেসীতে গেলাম দেড়মাস আগেই। সব দরকারী ডকুমেন্টস-ফর্ম রেডি করে ইন্টারনেটে ওদের ওয়েবসাইটে অনলাইনে সাবমিট করলাম, সুবিধামত ইন্টারভিঊ এর তারিখ নিয়ে বিসমিল্লাহ বলে রওনা দিলাম। আশেপাশের বাংলাদেশীদের কথা শুনে আশা-নিরাশার দুলতে দুলতে চলে গেলাম সকালে এম্বেসীতে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট নিয়ে। এখানে বলে রাখা ভালো অনলাইন সাবমিশনের পর একটা কনফার্মেশন পেজ আসে, যেখানে থাকে বার কোড নাম্বার। এটা ভিসা ফী জমা দিতে লাগে এবং ইন্টারভিঊ তারিখ নিতেও লাগে। ইন্টারভিঊ এর তারিখে যে সময় থাকে ঐটা আসলে এম্বেসী বিল্ডিং এ প্রবেশএর সময়, ইন্টারভিঊ এর সময় নয়। মোটামুটি ৩~৪ ঘন্টা লাগবে এম্বেসীতে প্রবেশ করে প্রয়োজনীয় কাজ সারতে। এরা আগেই বলে দে সময় কাটানোর জন্য বই বা পেপার সাথে নিতে। তবে ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী যেমনঃ সেলফোন, ক্যামেরা, মিউজিক প্লেয়ার ইত্যাদি সাথে রাখা যাবে না এম্বেসীর ভেতরে, নিয়ে গেলেও ভেতরে প্রবেশের আগে এগুলি জমা নিয়ে আপনাকে একটা টোকেন দেবে, যেটা দেখিয়ে ফেরার সময় আপনার জিনিস্পাতি ফেরত নিতে পারবেন। যাহোক গিয়েই দেখি প্রবেশের জন্য সবাই লাইনে দাঁড়িয়েছে। আমার আগে প্রায় ১০০+ মানুষ। প্রায় ৪০মিনিটের মত লাইনে দাঁড়িয়ে ভেতরে প্রবেশ করলাম। সেখানেও চারশতাধিক মানুষ হবে, সবাই অপেক্ষা করছে, কারো ইন্টারভিঊ, কারো ভিসা এক্সটেনশন। বাংলাদেশী ঐদিন কাঊকে পেলাম না, ইন্ডিয়ান একজনের সাথে পরিচয় হলো, ওনার সাথে কিছু সময় কাটালাম। এরমাঝে আমার ডাক পড়লো, দুইহাতের ছাপ দিয়ে আসলাম। এরপর ডাকবে ইন্টারভিউ এর জন্য। সাথে নিয়ে গেছিলাম মাসুদ রানা সিরিজের বই, ছিলোও আমেরিকাকে নিয়ে গল্প,

(U.S. Embassy Tokyo. 1-10-5 Akasaka Minato-ku, Tokyo)
পড়তে পড়তে বেশ মজাই পাচ্ছিলাম। প্রায় ঘন্টা দুয়েক পড়ে ডাক পড়লো......প্রথমেই আমার নাম উচ্চারন নিয়ে সমস্যা দিয়ে শুরু হল, কারন আমাদের হাতে লেখা পাসপোর্ট, নিজের কাছেই লজ্জা লাগছিলো, সবার যেখানে মেশিন রিডেবল, সেখানে আমরা অতীতেই পড়ে আছি, যদিও দেশে এখন এটা শুরু হয়েছে। আনুষাঙ্গিক প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলো, কেন যাচ্ছি, কোথায় যাচ্ছি, থাকবো কোথায়, ট্রান্সপোর্টেশনের খরচ কে দিচ্ছে। প্রায় মিনিট বিশেক প্রশ্নের পর বললো যেহেতু কনফারেন্সের দেড়মাস বাকী সুতরাং সমস্যা নেই, আমাকে একটা ট্র্যাকিং নাম্বার দিলো ওদের ওয়েবসাইটে আমার ভিসার আপডেট জানার জন্য। তবে আশেপাশের বাংলাদেশীদের কথায় যতটা না হতাশ ছিলাম ভিসার ব্যাপারে, ইন্টারভিঊ এর পর তখন বেশ সহজই মনে হলো, যদিও আমার সামনেই দেখলাম, অনেককেউ ভিসা ডিনাই করে দিলো। যাহোক ৮০% সম্ভাবনা ভেবে ফিরে আসলাম ক্যাম্পাসে। প্রায় তিন সপ্তাহ পর পেয়ে গেলাম আমেরিকান ভিসা। অপেক্ষা শুধু ঊড়াল দেবার.........

এদিকে প্রফেসরের দেয়া একটা ট্রাভেল এজেন্সীর কাছ থেকে টিকেট নিয়ে নিলাম, ওরা বললো ট্রাভেল ইন্সুরেন্স করে নিতে। বাঙ্গালীর সহজাত প্রবৃত্তি হিসাবে ব্যাপারটা অদরকারী মনে হলেও পরে কিভাবে যেন ট্রাভেল ইন্সুরেন্স করেই ফেললাম আলাদা আট হাজার ইয়েন দিয়ে। যা আমার জন্য আমেরিকায় গিয়ে সুদে আসলে ঊঠে যে আসবে ভাবতেও পারি নি...............

চলবে......

Share/Bookmark

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

^ Back to Top