বৃহস্পতিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১০

অভাগা যেদিকে যায়......খাল-বিল-নদী-নালা-মহাসাগর শুকিয়ে যায়।




আজকের দিন কি দেখে যে শুরু করেছি মনে করতে পারছি না। সবকিছুতেই ভেজাল অবস্থা। যেভাবেই যাই, কিছুই এগোয় না। ল্যাবের জন্য একটা পোষ্টার প্রিন্ট করবো। এটা নিয়েই আজ ইতিহাস। প্রফেসর ইমেইল জানালো আফটারনুনে ক্যাড রুমে যেতে ওখানকার বড় প্রিন্টারে প্রিন্ট করতে হবে, যেহেতু জাপানীজ পিসি সুতরাং প্রফেসরই সাহায্য করবে। আমি ইমেইল দিলাম, আফটারনুন বললেই নির্দিষ্ট সময়টা কখন। জানলাম ১২টায় যেতে হবে, জো হুকুম জাঁহাপনা, গেলাম ১২টায়...............সেই থেকে ইতিহাস!!!!!!


ডাটা কেবলে সমস্যা, যেটা পিসি অনেক চেষ্টার পর জানা গেল। এবার প্রফেসর একটা ল্যাপ্টপ দিয়ে আমাকে বলে গেলেন, মাষ্টার্সের এক স্টুডেন্ট এসে আমাকে প্রিন্ট করতে সাহায্য করবে। কপাল খারাপ হলে আর কি বলবো, ল্যাপি কেবল চালু করে প্রিন্টার চেক করতেছি, পাওয়ার গেল। কিন্তু এভাবে তো পাওয়ার যাওয়ার কথা না। সবাই দেখি ল্যাব থেকে বাহিরে এসেছে, কারন ইলেক্ট্রিসিটি এভাবে চলে যাওয়ায় কেঊই বিশ্বাস করতে পারছে না, কারন এটা সিডিউল মেইন্টিনেন্সও না, কোন আগাম ঘোষনাও ছিল না, আর জাপানে লোডশেডিং? এমন ইতিহাস নেই। কিন্তু সেটাও আজ হয়ে গেল। কি আর করা, অপেক্ষায় থাকলাম। ২০মিনিট পরে আসলো পাওয়ার। আবার ল্যাপি নিয়ে ঝাপিড়ে পড়লাম। কিন্তু ্কপালের ফের, ল্যাপিতে ঐ প্রিন্টারের ড্রাইভার পাচ্ছে না। আবার আমি অফিস ২০০৭ এ কাজ করেছি কিন্তু ২০০৭ আর ২০০৩ দুই ভার্সেনেই সেভ করেছি, কিন্তু ঐ ল্যাপির অফিস ২০০৩ তে আমার কাজটার লেখা উদ্ভট দেখায়। ল্যাবে গেলাম ২০০৩ ভার্সনের জন্য ২০০৭ এর এড অন ডাঊনলোড করতে, আবারো কপাল মিয়া বিপক্ষে গেল। হঠাৎ পাওয়ার যাওয়ার এখনও নেট আসে নাই, পাওয়ার আসলেও।



দৌড়ে বাসায় গেলাম, এডঅন সহ পোর্টেবল অফিস ২০০৭ নামালাম। এরপর বাড়তি সতর্কতা হিসাবে ঐ প্রিন্টারের ড্রাইভার ডাঊনলোড করলাম, আমার ল্যাপিও নিলাম। শুরু হলো প্রিন্ট করার যুদ্ধ। পোর্টেবল অফিস ২০০৭ ব্যবহার করেও কাজ হচ্ছে না, সব ডিজাইন ওলট পালট। না হয় ওলটপালট হোক, ভাবলাম দেখি প্রিন্ট কেমন আসে, কিন্তু প্রিন্টার ইরোর দেখায়। মাষ্টার্সের ঐ ছেলে যখন হাল ছেড়ে দিলো, আমার ল্যাপি দিয়ে ট্রাই করা শুরু করলাম, দেখি আমি যে ড্রাইভার নামিয়েছি, সেটা সাপোর্ট করছে না। পরে প্রফেসর ল্যাব থেকে আসলো, এই অবস্থা দেখে সে নিজের অফিস রুম থেকে একটা আর একটা ড্রাইভার সফটওয়ার এনে দিলো, সেট আপ দিলাম আবার আমার ল্যাপিতে। কিন্তু প্রিন্টার এর মাথা বিগড়ে গেছে, প্রতিবার প্রিন্টার ইনিশিয়ালাইজ করতে গিয়ে ব্যাটা বারবার কাগজ কেটে ফেলছে, তাও যদি কাজ হত খুশি হতাম।


প্রিন্টার আবার এলার্ট দিচ্ছে কালি কমে গেছে, প্রফেসর সব কার্টিজ বদলে দিলো, শেষমেষ প্রিন্ট দিতে গেলাম, কিন্তু ইনপুট আর আউটপুট সাইজে ভুল করায়, প্রিন্ট হলো এ৪ এ, কি আর করা আবারো দিলাম প্রিন্ট কিন্তু এবার চ্রম ভেল্কি, ইনলার্জ এত হয়েছে যে কাগজের প্রস্থের দ্বিগুন পরিমান সাইজ এ প্রিন্ট করা শুরু করেছে, যা ফলাফল হাফ প্রিন্ট। মেজাজ চরম বিলা। কার এত মনযোগ থাকে? সেই ১২টা থেকে এই যন্ত্রনা চলছে, মাঝে নাকে মুখে একবার খাবার গিলে এসেছি। এবার সবকিছু ওকে করে প্রিন্ট দিলাম। কিন্তু ঐযে কথায় আছে না, অভাগা যে দিকে যায়......

প্রিন্টার এবার সাইজমতই প্রিন্ট করা শুরু করেছে, কিন্তু ১ম ৪০% বাদ দিয়ে এরপর থেকে প্রিন্ট করছে। কি আর করা প্রফেসরেরও বাসায় যাওয়া লেট হয়ে যাচ্ছে, সে বললো আচ্ছা, এবার তাহলে পেজ ১৮০ডিগ্রী করে প্রিন্ট করা হোক, তাহলে এবার প্রথমের অংশ প্রিন্ট হবে, পরে জোড়া দিলেই হবে। আমিও সায় দিলাম, কারন পেটের জ্বলুনি শুরু হয়েছে, মাগরিব-এশাও পড়ি নাই। কিন্তু শেষে এসে প্রিন্টার পুরাই চমক দেখিয়ে দিলো, উলটা দিক থেকে প্রিন্ট করতে দেওয়ার এবার সে ১০০% নির্ভুলভাবে প্রিন্ট দিলো, সেই সাথে আমার মোটামুটি ৭ঘন্টার যুদ্ধেরও পরিসমাপ্তি ঘটলো।
Share/Bookmark

৩টি মন্তব্য:

Unknown বলেছেন...

পোস্টটা নিয়া আমার কুনো মাথাব্যাথা নাই, আমার মাথাব্যাথা এত সুন্দর একটা সাইট...........ক্যামতে বানাইলেন???

নামহীন বলেছেন...

That's why most uni has printing service. You should go there in first place.

♛মুকুট♛ বলেছেন...

@muntasir, কই খুব বেশী ভালো এখনও করতে পারি নাই, চেষ্টা করছি, মাঝে ব্যস্ত থাকায় পুরোপুরি গোছাতে পারি নাই।


@নামহীন, উপড়ের দেয়া প্রিন্টার এর ছবিটা আমাদের ডিপার্টমেন্টের। পরে এটা থেকেই প্রিন্ট করা হয়েছিল।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

^ Back to Top