সোমবার, ৯ আগস্ট, ২০১০

হাহাকার সিরিজঃ ১

প্রবাসে আসার পর অন্যান্য দেশের শিক্ষার্থীদের নিজ দেশ থেকে প্রাপ্ত সুবিধাদি দেখে নিজের হাহাকার নিয়েই, এই হাহাকার সিরিজ।


আমাদের দেশে তেলের মাথায় আরো তেল দেয়া হয়। ফলে যারা উপড়ে থাকেন (উচ্চবিত্ত থেকে হাই ব্যাকিংওয়ালারা) তারা আরো উপড়ে  আর যারা নিম্নবিত্ত তারা আরো নিচে, আর যারা এই দুই এর মাঝামাঝি তারা না পারে ওপরে যেতে না পারে নিচে নামতে, অনেকটা ঝুলন্তময় অবস্থা। বলতেও পারে না সইতেও পারে না। আমাদের দেশে এমপিরা শুল্কমুক্ত গাড়ি আনার সুবিধা পান, আর অন্যদের ১০০% ট্যাক্স দিয়ে আনতে হয়। শুধু তাই না, ন্যাম ফ্লাটে থাকেন মাত্র ৬০০টাকার মাসিক ভাড়ায়। কি রাজ কপাল আমাদের জনপ্রতিনিধিদের। বিশ্বের কোন দেশের জনপ্রতিনিধিরা এতএত সুবিধা পান কিনা সন্দেহ আছে কিছুদিন আগেই ইউএস ফার্স্টলেডি মিশেল ওবামার স্পেনে অবকাশকালীন টাকা খরচ নিয়েও কথা উঠেছে, আর আমাদের দেশে...............???

যাহোক গাড়ি কেনার ট্যাক্সের প্রসঙ্গে আসি,  এমপিরা ব্যতিত সমাজের উপড়তলার মানুষ জনের জন্য এই ট্যাক্স কোন সমস্যাই না, হাতের ধুলা, এজন্য তারা পরিবারের প্রত্যেকের জন্য আলাদা গাড়ির ব্যবস্থা করতে পারেন। অথচ একজন মধ্যবিত্ত পরিবারের হয়ত খুবই প্রয়োজন একটা গাড়ীর হয়ত বাসায় বৃদ্ধ বাবা-মা
আছেন, একটা গাড়ি থাকলে এনাদের যাতায়াতে সুবিধা হত, কিন্তু ঐ যে গলার ফাঁস ১০০% ট্যাক্স। কোন রকমে গাড়ি কেনার টাকা হলেও ট্যাক্স দেবার টাকা নেই। যার গাড়ির জরুরী প্রয়োজন সে মাত্রারিক্ত ট্যাক্সের জন্য গাড়ি কিনতে পারছে না, আবার উপড়তলার মানুষরা যাদের কাছে টাকা হলো হাতের ধুলা তারা জনে জনে গাড়ি কিনে রাজপথ গাড়িময় করে ফেলছে। সবার জন্য গাড়ির ট্যাক্স সমান করা উচিত না, আর্থিক সামর্থ্যের উপড় ভিত্তি করে ট্যাক্স নির্ধারন করা উচিত। হয়ত একজন সদ্য অবসরে যাওয়া ব্যক্তি তার রিটায়ারমেন্টের টাকা দিয়ে একটা আধা ভাঙ্গা গাড়ি কেনার সামর্থ্য থাকলেও ট্যাক্সের জন্য সেটা পারছেন না।

এবার আসি মালয়েশিয়ার কথায়। মালয়েশিয়ার শিক্ষার্থী যারা উচ্চ শিক্ষার্থ্যে বিভিন্ন দেশে পড়াশুনা করছে, তাদের জন্য গাড়ি কিনলে কোন ট্যাক্স দিতে হয়না। অর্থাৎ তারা যদি উচ্চশিক্ষা শেষ করে আসার সময় গাড়ি কিনে আনে, তাদের জন্য ট্যাক্স মওকুফ। কি সুবিধা। আর আমাদের দেশের নিয়ম/আইন এমনভাবে তৈরি হবে, যাতে তেলের মাথায় আরো তেল ঢালা যায়।


 এবার আসি বাংলাদেশ বিমান প্রসঙ্গে। দুর্ণীতির আখড়া এই প্রতিষ্ঠান। আগে একবার শুনেছিলাম বিমান সংশ্লিষ্ট উচ্চপর্যায়ের কারো আত্নীয় বা নিজে নিয়মিত কোন দেশে নাকি যাওয়া লাগতো, এজন্য লোকসান সত্বেও ঐ রুট চালু ছিলো, বরং লাভজনক রুট বন্ধ করে দেয়া হয়েছিলো। বহিবিশ্বে অধ্যায়নরত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদেক বিমানে ভ্রমনে উৎসাহিত করতে নেই কোন বিশেষ সুবিধা। অথচ ইন্দোনেশিয়ার সরকারী এয়ারলাইন্স গারুদা-র ইন্দোনেশীয় শিক্ষার্থী যারা বাহিরে পড়ালেখা করছে তাদের জন্য টিকিটে অনেক ছাড় দেয়া আছে। প্রায় ৫০~৭৫% ছাড় থাকে স্বাভাবিক টিকেটের দাম থেকে। কে নেবে আমাদের দেশে এই উদ্যোগ? যারা নেবে, সেই সুশীল সমাজও নিজেদের আখের গোছানোর জন্য ভাষন-বক্তৃতা দেবে, কিন্তু সর্বসাধারনের উপকারে আসার মত ঊপায় নিয়ে কেঊ ভাববে না।


চলবে......
Share/Bookmark

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

^ Back to Top