বৃহস্পতিবার, ৫ আগস্ট, ২০১০

জাপানের ডায়েরীঃ এলোমেলো পর্ব

সময় কেমন জানি মনে হয় স্থবির হয়ে পড়েছে! আবার কখনও মনে হয় সময়টা সময়ের মতই লাফায়ে লাফায়ে পার হয়ে যাচ্ছে! এখন মোটামুটি একটা স্বাভাবিকতা চলে এসেছে এখানে! তবে সবচেয়ে হাসি লাগে ভাবতে যে সকালে ঘুম থেকে উঠে (দেশে থাকতে) যদি কর্মস্থলে থাকতাম, চিন্তা করতাম ডাইনিং এ বাবুর্চি কি খাওয়াবে বা বাসায় গেলে চিন্তা করতাম মা কি খাওয়াবে! আর এখন সকালে ঘুম থেকে উঠেই রান্নার মেনু নিয়ে ভাবি, কি রাধবো, কি খাবো দুপুর আর রাতে, কেমন জানি একটা গৃহপালিত ভাব চলে এসেছে! এরপর রাইস কুকারে রান্না দিয়ে সকালের কিছু হালকা নাস্তা করে ল্যাবে দৌড়, আবার দুপুরে এসে কোন রকম গলাধঃকরন আবার ল্যাব আবার রাতে এসে খেয়ে ঘুম! মাঝে
রিফ্রেসনেস আনার জন্য ব্লগিং করা! সবই যেন রোবোটের মত পালন করছি! আশে পাশের জাপানিদেক দেখলেই মনে হয় এক একটা রোবোট! ল্যাবমেটরাতো দেখি ল্যাবেই খাইতে খাইতে ঘুমাচ্ছে , পিসিতে খেলছে বা গান শুনছে আবার নিজের কাজ করছে! কাজের মাঝেই এরা নিজেকে সমর্পন করেছে, আবার দেখা যাবে হঠাৎ একটা দিনে (সাধারনত ছুটির দিনে) সবাই মিলে হইহুল্লোড় করছে! তবে এখানে দেখলাম এরা অনেক বেশী ফ্রাসট্রেটেড, ধুমপায়ীর সংখ্যাও অনেক! ক্যাম্পাসে ধুমপানের জন্য জায়গা নির্দিষ্ট করা আছে, সেখানে দেখাবে ৫/৭জন মিলে জামাতে ;) সিগারেট খাচ্ছে! অনেকেই রাস্তায় চলার পথে দেখলাম, একাই কি সব বিড় বিড় করে বলছে! এক মহিলাকে তো দেখলাম একটা সিঁড়িতে উঠছে আর নামছে আর কি সব বলছে! :-* এদের আয় রোজগার যেমন বেশী তেমনি হতাশাও বেশী, তাই মনে হয় আত্নহত্যার দিক দিয়ে এরা টপে! টাকাও বেশী ইনকাম করে আবার জিনিস কেনে পিস অনুযায়ী! :P ফলে আমার মনে হয় সবই যায় চলে, সেইভ আর হয়না! এদের দেশের এই উপার্জিত অর্থ যদি আমাদের দেশের মত কেনাকাটা করতে পারত তাহলে হয়ত এদের আনন্দের সীমা থাকত না! এজন্যই হয়ত বাংলাদেশেক সবচেয়ে সুখী দেশ হিসাবে জরিপে পাওয়া গেছে এত কষ্টের মাঝেও! B-)

আবার এদের কাজকর্মও দেখলাম বেশ আয়োজন করে শুরু করে! ক্যাম্পাসের মেইন রাস্তার গাছের বর্ধিত ডালপালা কাটছে, ৪/৫জন লোকের গ্রুপ, সামান্য কাজ অথচ ক্রেন/পাওয়ার স্ ব্যবহার করছে! অবশ্য এদের কাজে যেটা দেখলাম তা হলঃ সেফটি ফাস্ট! সেই সাথে নিয়মতান্ত্রিকভাবে! সব কিছুই সাজানো গোছানো, এজন্যই হয়ত পুরা দেশটাই সাজানো গোছানো!
Share/Bookmark

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

^ Back to Top