বৃহস্পতিবার, ৫ আগস্ট, ২০১০

জাপানের ডায়েরী-৩!

সবকিছু কেমন জানি লাগছে! ল্যাবে সবাই নিজের ডেস্কেই নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে! এমন ঘুমাচ্ছন্ন পরিবেশে আমিও কেমন জানি কেমন হয়ে যাচ্ছি! তাই আবার জাপানের অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখছি, নিজের ঝিমুনিভাব কাটার জন্য!


জাপানে এসে চারিদিকে যখন আমি জাপানিজ ভাষার কাই ক্যুই এ নাজেহাল তখনই এদের সাহায্যকারী মনোভাব দেখে যার পর নাই তৃপ্ত ও সন্তুষ্ট! এদের বেশীর ভাগই ইংরেজী জানে না, তাতে কি আপনি কোন কিছু জিজ্ঞাসা করলে না নাই, সর্বচ্চ চেষ্টা করবে বুঝতে এবং বুঝাতে! আমি ল্যাবেই দেখেছি আমার হয়ত কিছু সাহায্য লাগছে, যাকে বলছি তার যতই
জরুরী কাজ থাক না কেন, আমাকে সাহায্য করছে! কখনই আমাদের মত `এখন পারব না/অন্য কাউকে বল` এই স্বভাবটা একেবারেই এদের দৈনন্দিনের সিলেবাসে।পরশু দিন গিয়েছিলাম ইউনিভার্সিটির কো-অপারেটিভ শপে যাকে সংক্ষেপে কুপ বলে! এখানে ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্টদের আবার এরা ক্রেডিট কার্ড দেয় যা জাপান সহ অন্যদেশেও কাজ করে! আমি দোকানে জিজ্ঞাস করলাম একজন সেলসওম্যানকে যে আমি ওদের মেম্বার হবার জন্য ফরম কই পাবো, সে বলল অফিসে যাও! আমি বললাম আমিতো চিনি না! সে তখন আমার সাথে নিয়ে অফিসে নিয়ে গেল, শুধু তাই না সেই মোটামুটি ইংরেজী জানে কুপের অফিসিয়াল দের চেয়ে! যা হোক সে তার কুপ শপে দিউটি ফেলে আমাকে প্রায় ৩০/৪০মিনিট ধরে কো-অপারেটিভ শপের মেম্বার হবার জন্য ফরম পূরণ করতে সাহায্য করলেন! জাপানে একটা বিরক্তিকর সমস্যা হল যে প্রতিটা ফরমেই আপনি ইংরেজী লিখতে পারলেও মুল নাম ইংরেজীর পাশাপাশি অবশ্যই জাপানিজে লিখতে হবে! এজন্য কোন কিছু পূরণ করার সময় একজন জাপানীজ লাগে, যাতে নামটা জাপানীজে লেখা যায়! এজন্য সকল ফরেন স্টুডেন্টদের জন্য একজন করে জাপানীজ টিউটর থাকে যে মোটামুটি ইংরেজী জানে!

যা হোক সেদিন ঐ ভদ্র মহিলার নিষ্ঠার সাথে আমাকে ফরম পূরনে সাহায্য পেয়ে কৃতজ্ঞতায় মনটা ভরে গিয়েছিলো, যদিও আমার কাছে ব্যাপারটা নতুন হলেও ওদের কাছে এটাই স্বাভাবিক! আসলে আমাদের ওদের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে দৈনন্দিন আচার-আচরনে!

(২১ শে অক্টোবর, ২০০৮)
Share/Bookmark

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

^ Back to Top