বৃহস্পতিবার, ৫ আগস্ট, ২০১০

জাপানের ডায়েরী-৪

এবার জাপানীজ রেস্তোয়ার খাবারের অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করব! জাপানে পৌছার পর দরকারী ফরমালিটিস শেষ করে, ইন্টাঃ হাউজে আমার রুমের দিকে যাবার জন্য পা বাড়ালাম, তখন প্রফেসর বলেলন আমদেক নিয়ে লান্চ করবেন। আসলে এই লান্চ ছিলো তার ল্যাবের ২ নবাগতের জন্য! আর একজন হল ইন্দোনেশিয়ান! যা হোক, জীবনে ১ম বার জাপানীজ রেস্তোরায় খাবারের অভিজ্ঞতা আর স্বাদের জন্য এগোলাম, আবার ভয়ও লাগছিলো যে ওদের সব খাবারেই পর্ক মেশানো থাকে, সংরক্ষনের জন্য! যা হোক রেস্তোয়ার পৌছেই একটা ধাক্কা খেলাম! একেবারে ভিন্ন গেট-আপ! তাজা মাছ আর মাংস টেবিলে, লোকজন অর্ডার করছে আর সেই অনুযায়ী আগুনে আচিয়ে পরিবেশন করছে! তবে সবচেয়ে মজার বিষয় হল, রেস্টোরার মাঝে গোলাকার রিঙের মত টেবিল, আর রিঙের বাহির দিকে চলমান তাক আছে, যেখানে ডিম, চিংড়ী মাছ সহ নাম না জানা অদ্ভুদ কিসিমের জীব ছোট্ট বাটিতে করে পর পর সাজানো, সেগুলিও ঘুরছে, যা অনেকটা প্লেন থেকে নেমে লাগেজ নেবার মত সিস্টেম! অচেনা খাদ্যদ্রব্য দেখেই গুলিয়ে উঠছিলো সবকিছু! একটু পর দেখলাম ছোট ছোট অক্টোপাস! যা হোক, আমার মত ইন্দোনেশিয়ানেরও একই অবস্থা
সেও মুসলিম! দেখলাম আমার দিকে তাকিয়ে আছে! যা হোক এবার প্রফেসরকে অনুসরন করে সেই জাপানের বিখ্যাত ২টা কাঠি নিলাম, এরপর চিংড়ী নিলাম ৪টা! এগুলোও অদ্ভুত, আঙুলের সমান চিংড়ী পেট কেটে ভেতরে ১ লোকমা পরিমান সিদ্ধ ভাত! তারপর......??? খেতে হবে ২টা কাঠি দিয়ে! শুরু হলো এক মহাযুদ্ধ, আমি কাঠি দিয়ে তুলি বাটি থেকে ২ইন্চি তোলার পর পরে যায়! কি যে অস্বস্থিকর অবস্থা! চিকন ২টা স্টিক দিয়ে নাকি খাওয়া যায়! যাহোক প্রফেসর দেখি হাসছেন আমার করুন দশা দেখে! পে বললেন হাত দিয়ে খাও, আমরাও মাঝে মাঝে হাত দিয়ে খাই! আমিও হাফ ছেড়ে বাচলাম!৪টা এমন চিংড়ী খেয়ে মনেই হলো না কিছু খেলাম! এরপর প্রফেসর বললেন একটা বাটি নিতে, যেটাতে মুরগীর ডিম স্পেশাল ভাবে ফ্রাই করা ছিলো! নিলাম ২টা! আর এখানে রেস্তোরাগুলোতে গ্রীনটি ফ্রী, যে যা খেতে পারে! যাহোক ভয়ে ভয়ে গ্রীন টি খেলাম, কারন জাপানীজ গ্রীন টি নাকি খুব তেঁতো, কিন্তু না অতোটা নয়! এরপর প্রফেসর বললেন তোমাদেরতো অক্টোপাস প্রবলেম আমি অক্টোপাস খাই তোমরা চুজ কর, এরপর প্রফেসর একে একে ইংরেজী নাম বলছেন আর আমি আর ইন্দোনেশিয়ান দেখছি! অবশেষে রুঁপচাদার মত একটা মাছ নিয়ে খাবার শেষ করলাম অর্ধেক হাতে আর অর্ধেক কাঠি দিয়ে! মাঝে আবার ভাবছি আমরা যা খাচ্ছি তা হিসাব করবে কিভাবে! খাবর শেষে সেখানেও নতুনত্ব পেলাম! খাবার শেষ হলে একজন বারকোড রিডার জাতীয় যন্ত্র আনার পর একে একে যে বাটিগুলোতে খেয়েছি আমরা ৩জন সেখানে স্পর্শ করল আর একে একে রিডিং উঠছে! এখানে আসলে বাটিগুলো ছিলো বিভিন্ন কালারের! সুতরাং এটা কালার কোডিং সিস্টেম সম্ভবত!
যা হোক শেষে প্রফেসর তার কার্ড দিয়ে বিল মিটিয়ে আমাদের নিয়ে ক্যাম্পাসের পথে হাঁটা দিলেন!


(২২ শে অক্টোবর, ২০০৮)
Share/Bookmark

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

^ Back to Top