আজ সত্যিই খুব ভালো লাগছে এই ভেবে যে, অন্তত কজন বিদেশীকে বাংলাদেশের কিছু গৌরব/অর্জন সম্পর্কে জানাতে পেরেছি! কাহিনীটা শুরু এভাবে! জাপানে এসে আমি সেল ফোন নেবার পর পরই ঘাটাঘাটি করছিলাম বিভিন্ন ফিচার নিয়ে, কদিন চেষ্টার পরও আমি আমার সেল ফোন থেকে বাংলাদেশে এসএমএস করতে পারছি না! ল্যাবমেটকে জানানোর পর বলল রেজিঃ করতে হবে আর ইন্টাঃ এসএমএস এর জন্য আর খরচ পড়বে ১০০ইয়েন করে! তখন ল্যাব মেটকে বুঝালাম যে আমারা বাংলাদেশ থেকে বিদেশে মাত্র ২.৫০ টাকায় এসএমএস করতে পারি! কিন্তু পয়সা বুঝাতে গিয়ে ঝামেলায় পড়লাম! সেন্ট-র সমান্তরাল করে অনেক কষ্টে বুঝালাম! এরপর ওকে বললাম জাপানে ১০০০০ইয়েনের নোট থাকলেও বাংলাদেশে এই সপ্তাহে কেবল ১০০০টাকার নোট বের হয়েছে, ল্যাবমেট শুনেতো থ! এরপর দেখি বাকি ল্যাবমেট গুলোও এগিয়ে আসলো! তখন ওরা বলল আমাদেক বাংলাদেশের নোটগুলা দেখাতে পারবে, আমার মানিব্যাগে কিছু ছিলো, কিন্তু দেখানোর সময় আর পেলাম না! ওদেক একটু ওয়েট করতে দিয়ে নেটে সার্চ দিয়ে হঠাৎ ফেসবুকে পেয়ে গেলাম এই লিঙ্কটা! , যা হোক দেখালাম আর বুঝালাম! এরপর ১০০০টাকার নোটের ছবি দেখতে চাইলো, আবার নেটে ঢ্যু দিয়ে পেলামডেইলি ষ্টারের এই ছবিটা! কিন্তু সবই বুঝলো কিন্তু শহীদ মিনার চেনে না! আবার শহীদ মিনারে ছবির জন্য আবার ঢ্যু দিলাম উইকিতে আর পেয়েও গেলাম দরকারি ছবিটা! তারপর বুঝালাম মায়ের ভাষা বাংলাকে রাষ্টভাষা করার জন্য বাংলার দামাল ছেলেরা রাজপথে মিছিল বের করলে হায়েনা পাকিস্থানী সরকারের নিরাপত্তাবাহিনী নির্বিচারে গুলি চালালে শহীদ হোন বাংলা মায়ের ছালাম,বরকত,রফিক, জব্বারসহ নাম না জানা অনেকেই! তাদেরই স্মরণে ঐ জায়গায় যে স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে উঠেছে সেটাই শহীদ মিনার যা ১০০০টাকার নোটে বিরাজমান! তবে ইউনেস্কো ২১শে ফেব্রুয়ারীকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষনা করলেও, বাংলাদেশের যথাযথ পদক্ষেপের অভাবে অনেকই এই দিবস সম্পর্কে কিছুই জানে না! আমার ল্যাবমেটরাও কিছু জানে না! মনে হল এই প্রথম নামটা শুনল।
ওদেক তখন বললাম, বাংলা মায়ের এই দামাল ছেলেদের মত কেউ মায়ের ভাষার প্রতিষ্ঠার দাবীতে এমন জীবন উৎসর্গ করে নাই, তাদের এই দৃষ্টান্তকে অবিস্মরনীর করে রাখতে ১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর ইউনেস্কো বিশ্বব্যাপী ২১শে ফেব্রুয়ারীকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে ঘোষনা করেছে! যা হোক অবশেষে ওদেক বুঝাতে পারলাম আমাদের কষ্ট আর গৌরব-অর্জনে! বিদেশে থেকেও মাতৃভূমির কিছু দামাল ছেলে আর আমাদের গৌরবাহ্নিত সাফল্যকে ওদেক বুঝাতে পেরে সাংস্কৃতিক সপ্তাহে বাংলাদেশের অনুপস্থিতি হয়ত কিছুটা হলেও কমাতে পেরেছি, ভালোই লাগছে নিজের কাছে!
কৃতজ্ঞতাঃ ফেসবুক,ডেইলী ষ্টার, উইকিপেডিয়া!
(৩১শে অক্টোবর, ২০০৮)

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন